গাছের কথা
জগদীশচন্দ্র বসু
বিষয়সংক্ষেপ
লেখক জগদীশচন্দ্র বসু যখন থেকে গাছ, পাখি ও কীটপতঙ্গদেরকে নিবিড়ভাবে ভালোবেসেছেন, তখন থেকে তাঁর জীবনের একাকিত্ব দূরীভূত হয়েছে এবং তাদের জীবনের অনেক কথাই তিনি বুঝতে পেরেছেন। আমাদের মতো তারাও যে আহার করে বেড়ে ওঠে, পরস্পরের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলে, কষ্টে পড়ে কখনোকখনো এদের মধ্যে কেউ কেউ চুরি ডাকাতি করে তা তিনি উপলদ্ধি করতে পারেন। তিনি লক্ষ করেছেন “গাছের জীবন মানুষের জীবনের ছায়ামাত্র।” এই প্রসঙ্গে তিনি জীবন বলতে বোঝাতে চেয়েছেন, গতিশীলতাকে। তবে কখনো-কখনো জীবন সুপ্ত অবস্থায় থাকে। মাটি, জল ও উত্তাপের সংস্পর্শে তা অঙ্কুরে পরিণত হয়। ডিমের মধ্যে জীবন যেমন সুপ্ত অবস্থায় থাকে, তেমনই গাছের বীজও একপ্রকার কঠিন ঢাকনারূপী আবরণ যার মধ্যে প্রাণ সুপ্ত অবস্থায় থাকে এবং উপযুক্ত পরিবেশে তা অঙ্কুরিত হয়। নানা উপায়ে বীজ ছড়িয়ে পড়ে মাটিতে। কখনো পাখিদের দ্বারা, কখনো বা বাতাসের দ্বারা। প্রত্যেকটি বীজ থেকেই যে গাছ জন্মায়, তা বলা যায় না। মূলত অঙ্কুর বের হতে গেলে জল, মাটিও উত্তাপের প্রয়োজন। এক-এক বীজ এক-এক সময়ে পাকে এবং মাটিতে ঝরে পড়ে। মাটিও যেন তাদের কোলে তুলে নেয় এবং মায়ের মতোই পরম আদরে বাইরের ঝড়ঝঞ্চা থেকে মায়ের মতোই রক্ষা করে, লালনপালন করে।
হাতে কলমে
১.১ জগদীশচন্দ্র বসুর লেখা একটি বইয়ের নাম লেখো।
উঃ জগদীশচন্দ্র বসুর লেখা একটি বইয়ের নাম ‘অব্যক্ত।
১.২ জগদীশচন্দ্র বসু কী আবিষ্কার করেছিলেন ?
উঃ জগদীশচন্দ্র বসু আবিষ্কার করেছিলেন গাছেদেরও প্রাণ আছে। এ ছাড়াও তিনি ক্রেসকোগ্রাফ’ নামক একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছিলেন।
২ নীচের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর একটি বাক্যে লেখো :
২.১ লেখক কবে থেকে গাছেদের অনেক কথা বুঝতে পারেন ?
উঃ লেখক যেদিন থেকে গাছেদেরকে ভালোবাসতে শিখেছেন, সেদিন থেকেই গাছেদের অনেক কথা বুঝতে পারেন।
২.২ ‘ইহাদের মধ্যেও তাহার কিছু কিছু দেখা যায়। —কী দেখা যায় ?
উঃ মানুষের মধ্যে যেসব সদগুণ আছে, গাছেদের মধ্যেও তার কিছু কিছু দেখা যায়।
২.৩ জীবিতের লক্ষণ কী তা লেখকের অনুসরণে উল্লেখ করো।
উঃ জীবিতের লক্ষণ হল— যা জীবিত তা ক্রমশ বাড়তে থাকে এবং যার গতি আছে। অর্থাৎ, জীবিতের লক্ষণ। হল— বৃদ্ধি ও গতি।
২.৪। বৃক্ষশিশু নিরাপদে নিদ্রা যায়।বৃক্ষশিশু কোথায় নিদ্রা যায় ?
উঃ বীজের উপরে থাকা কঠিন ঢাকনার মধ্যে বৃক্ষ শিশু নিরাপদে নিদ্রা যায়।
২.৫ অঙ্কুর বের হওয়ার জন্য কী কী প্রয়োজন ?
উঃ অঙ্কুর বের হওয়ার জন্য উপযুক্ত উত্তাপ, জল ও মাটি প্রয়োজন।
৩ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
৩.১ ‘আগে এসব কিছুই জানিতাম না।—কোন্ বিষয়টি লেখকের কাছে অজানা ছিল ?
উঃ লেখক জগদীশচন্দ্র বসু যেদিন থেকে গাছ, পাখি ও কীটপতঙ্গদের ভালোবাসতে শিখেছেন, সেদিন থেকেই তিনি গাছেদের অনেক কথাই বুঝতে পারেন। তিনি বুঝেছিলেন, গাছেরা কথা না বললেও এদেরও একটা জীবন আছে। আমাদের মতো এরাও যে আহার করে এবং দিন দিন বেড়ে ওঠে, তাও তিনি বুঝতে পারেন। আগে তিনি এসব কিছুই জানতে পারতেন না।
৩.২‘ ইহাদের মধ্যেও তাহার কিছু কিছু দেখা যায়।‘ —কাদের কথা বলা হয়েছে ? তাদের মধ্যে কী লক্ষ করা যায় ?
উঃ আলোচ্য অংশে উদ্ভিতের কথা বলা হয়েছে।
আমাদের জীবনে যেমন মাঝে মাঝে অভাব, দুঃখ ও কষ্ট দেখা যায়, তেমনই এদের মধ্যেও সেগুলি দেখা যায়। কষ্টে পড়ে এরাও আমাদের মতো কেউ কেউ চুরি-ডাকাতি করে। মানুষের মধ্যে যেমন সচরাচর কিছু কিছু সদগুণ লক্ষ করা যায়, তেমনই এদের মধ্যেও সেই সমস্ত সদগুণের প্রকাশ লক্ষ করা যায়।
৩.৩ ‘গাছের জীবন মানুষের ছায়ামাত্র। – লেখকের এমন উক্তি অবতারণার কারণ বিশ্লেষণ কর।
উঃ লেখক জগদীশচন্দ্র বসু গাছকে নিবিড়ভাবে ভালোবেসে তাদের জীবনের বিভিন্ন দিকগুলিকে পর্যবেক্ষণ করেছেন। এর থেকে তাঁর মনে হয়েছে, গাছের বৈশিষ্ট্যগুলি মানুষের মধ্যেকার নানান স্বভাব বৈশিষ্ট্যের অনুরূপ। মানুষের মতো এদের জীবনেও অভাব-অনটন এবং দুঃখকষ্ট আছে। অভাবে পড়ে এরাও মানুষের মতো চুরি-ডাকাতি করে। মানুষের মধ্যে যেমন সদগুণ আছে, এদের মধ্যেও সেই সগুণের বহিঃপ্রকাশ লক্ষ করা যায়। এরাও একে অন্যকে সাহায্য করে। এদের মধ্যেও বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠতে দেখা যায়। মানুষের প্রধান গুণ। হল— স্বার্থত্যাগ। এই গুণটি গাছেদের মধ্যেও লক্ষ করা যায়। মনুষ্য সমাজে মা তার নিজের জীবন দিয়ে সন্তানের জীবন রক্ষা করে। উদ্ভিদের ক্ষেত্রেও এই মানবিক বৈশিষ্ট্যের পরিচয় মেলে। এই সমস্ত লক্ষণের প্রতি দৃষ্টিপাত করে জগদীশচন্দ্র বসু বলেছেন, “গাছের জীবন মানুষের জীবনের ছায়ামাত্র”।
৩.৪ জীবনের ধর্ম কীভাবে রচনাংশটিতে আলোচিত ও ব্যাখ্যাত হয়েছে তা বিশ্লেষণ করো।
উঃ ‘গাছের কথা’ নামক রচনায় বিজ্ঞানাচার্য জগদীশচন্দ্র বসু গাছের জীবনধর্মের আলোচনা প্রসঙ্গে জীবনের স্বাভাবিক ও সাধারণ ধর্ম সম্পর্কে সুচিন্তিত মতামত দিয়েছেন। শুকনো ডাল আর জীবিত গাছের তুলনা করে তিনি বলেছেন— বিকাশ, বৃদ্ধি ও গতি হল জীবনের ধর্ম। শুকনও ডালের এই বৈশিষ্ট্য নেই।‘গতি’ বোঝাতে লেখক লতানো গাছের উদাহরণ দিয়েছেন। বিকাশ ও পরিণতি যে প্রাণের ধর্ম— তা বোঝাতে তিনি বীজ ও ডিমের কথা বলেছেন। উত্তাপ, জল ও মাটির সংস্পর্শে বীজ থেকে অঙ্কুরোদগম হয় এবং তা থেকে যথাসময়ে চারাগাছ বৃদ্ধি পেয়ে পরিণতো হয়ে ওঠে। অনুরূপভাবে, মানব জীবনেও উপযুক্ত পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।
৩.৫, নানা উপায়ে গাছের বীজ ছড়াইয়া যায়। উপায়গুলি পাঠ্যাংশ অনুসরণে আলোচনা করো।
উঃ বীজ ছড়ানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে লেখক জানিয়েছেন প্রথমত, পাখিরা ফল খেয়ে দূর দূর দেশে বীজ নিয়ে যায়। ফলে অনেক জনমানবহীন দ্বীপেও গাছ জন্মে থাকে। এ ছাড়া অনেক সময় বীজ প্রবল বাতাসে উড়ে গিয়ে দূর দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষত, শিমুল গাছের ফল রৌদ্রে ফেটে যাওয়ার পর তার বীজ তুলোর সঙ্গে উড়ে বেড়াতে থাকে। এইভাবে দিনরাত দেশদেশান্তরে বীজ ছড়িয়ে পড়ছে।
৩.৬ লেখক তার ছেলেবেলার কথা পাঠ্যাংশে কীভাবে স্মরণ করেছেন, তা আলোচনা করো।
উঃ বিজ্ঞানাচার্য জগদীশচন্দ্র বসু তাঁর গাছের কথা নামক প্রবন্ধের শুরুতেই তিনি বলেছেন— ছেলেবেলায় একা মাঠে বা পাহাড়ে বেড়াতে গেলে সবকিছুই যেন খালি খালি লাগত। গাছ, পাখি, কীটপতঙ্গকে লেখক তখনও সেভাবে ভালোবাসতে শেখেননি। পরে যখন ভালোবাসতে শিখলেন, তখন তাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে বুঝতে পারলেন যে, গাছ কথা না-বললেও এদের জীবন আছে। এরপর শিমুল ফল ফেটে তুলোর সঙ্গে হাওয়ায় উড়তে থাকার ঘটনার উল্লেখ করে তিনি ছোটোবেলার কথা মনে করেছেন। বাতাসে ভাসতে থাকা তুলোর পিছনে তিনি যখন ছুটোছুটি করতেন, সেগুলি বাতাসের গতিতে এদিক-ওদিক চলে যেত। হাত বাড়িয়ে ধরা সম্ভব হত না। কিন্তু লেখক এর মধ্যে খেলার আনন্দ খুঁজে পেতেন। এভাবেই লেখক পাঠ্যাংশে তাঁর ছেলেবেলার কথা স্মরণ করেছেন।
৩.৭ ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন বীজ পাকিয়া থাকে। উদ্ধৃতিটির সাপেক্ষে নীচের ছকটি পূরণ করো।
১. আম, কাঁঠাল — গ্রীষ্ম ঋতু
২. লিচু, জাম — গ্রীষ্ম ঋতু
৩. তাল — বর্ষা ঋতু
৪. ধান — শরৎ ও হেমন্ত ঋতু
৫. কূল — বসন্ত ঋতু
৩.৮ পৃথিবী মাতার ন্যায় তাহাকে কোলে লইলেন। —বিশ্বপ্রকৃতি সম্পর্কে লেখকের গভীর উপলব্ধি উদ্ধৃতিটিতে কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে তা আলোচনা করো।
উঃ জগদীশচন্দ্র বসু বিজ্ঞানী হলেও তাঁর মধ্যে ভারতীয় দর্শন চেতনা ছিল প্রবল। ভারতীয় দর্শনে প্রকৃতির মধ্যে মাতৃত্বসত্তার প্রকাশ লক্ষ করা যায় । তাই গাছের কথা’ প্রবন্ধে প্রাকৃতিক ঘটনার মধ্যে মাতৃসত্তার বিকাশকে লক্ষ করেছেন লেখক। বিশ্ব প্রকৃতিকে লেখক মায়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন। মা যেমন সন্তানকে পরম স্নেহে কোলে তুলে নেয় এবং সমস্ত প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে সন্তানকে আড়াল করে তাকে লালিত পালিত করে, বিশ্ব প্রকৃতিও তেমনই গাছের বীজকে সন্তান স্নেহে কোলে তুলে নেয়। তার ধুলো ও মাটি দ্বারা তাকে আবৃত করে রাখে এবং শীত ও ঝড়ের হাত থেকে তাকে রক্ষা করে। মায়ের মতো বিশ্বপ্রকৃতিও বীজরূপী সন্তানকে ধীরে ধীরে জল-আলো-বাতাস ও মাটি দ্বারা ছোট্ট চারা গাছ থেকে বৃহৎ বৃক্ষে পরিণত করে। এভাবে বিশ্বপ্রকৃতি যথার্থ মায়ের ভূমিকা পালন করে।
৩.৯ প্রত্যেক বীজ হইতে গাছ জন্মে কিনা, কেহ বলিতে পারে না। বীজ থেকে গাছের জন্মের জন্য অত্যাবশ্যকীয় শর্তগুলি আলোচনা করো।
উঃ বীজ থেকে গাছের জন্মের জন্য অত্যাবশ্যকীয় শর্তগুলি হল—উত্তাপ, জল ও মাটি। প্রতিটি বীজ থেকে গাছ জন্মায় কিনা তা কেউ বলতে পারে না। কারণ, কোনো বীজ হয়তো পাথরের ওপর পড়ল, ফলে সেখানে সেই বীজ থেকে অঙ্কুর বের হওয়া সম্ভব হল না। যতক্ষণ মাটির সংস্পর্শে উপযুক্ত স্থানে বীজ পড়ে—ততক্ষণ পর্যন্ত তা থেকে অঙ্কুর জন্মাতে পারে না। জল ছাড়া বীজের অঙ্কুরোদগম সম্ভব হয় না। জল শোষণ করেই বীজ থেকে গাছ জন্মায়।
৩.১০ ‘তখন সব খালি খালি লাগিত।‘—কখনকার অনুভূতির কথা বলা হল ? কেন তখন সব খালি–খালি লাগত ? ক্রমশ তা কীভাবে অন্য চেহারা পেল তা পাঠ্যাংশ অনুসরণে বুঝিয়ে দাও।
উঃ লেখক জগদীশচন্দ্র বসু যখন একা একাই মাঠে কিংবা পাহাড়ে বেড়াতে যেতেন, তখনকার অনুভূতির কথা বলা হয়েছে।
তখন সব খালি খালি লাগত কারণ তখন তিনি গাছ পাখি বা কীটপতঙ্গদেরকে নিবিড়ভাবে ভালোবাসতে পারেননি। ফলে তাদের সঙ্গে তাঁর হার্দিক সম্পর্কও গড়ে ওঠেনি। তাই সব খালি খালি লাগত।
লেখক যখন থেকে গাছ, পাখি ও কীটপতঙ্গদের গভীরভাবে ভালোবেসেছেন, তখন থেকেই তাদের জীবনের অনেক কথা তিনি বুঝতে পারেন। তারাও যে আমাদের মতো আহার করে, দিন দিন বেড়ে ওঠে, মানুষের মতো তাদেরও যে আলাদা আলাদা চরিত্র-বৈশিষ্ট্য আছে, তা তিনি বুঝতে পারলেন। ফলে, তার একাকিত্ব আর হয় না।
৪ নির্দেশ অনুসারে বাক্য পরিবর্তন কর ।
৪.১ আগে যখন একা মাঠে কিংবা পাহাড়ে বেড়াইতে যাইতাম, তখন সব খালি খালি লাগিত।(সরল বাক্যে)
উঃ আগে একা মাঠে কিংবা পাহাড়ে বেড়াইতে গেলে সব খালি খালি লাগত।
৪.২ তাদের অনেক কথা বুঝিতে পারি, আগে যাহা পারিতাম না। (হা–সূচক বাক্যে)
উঃ তাহাদের অনেক কথা বুঝিতে পারি, আগে যাহা বুঝিতে অপারগ ছিলাম।
৪.৩ ইহাদের মধ্যেও আমাদের মতো অভাব, দুঃখ–কষ্ট দেখিতে পাই। (জটিল বাক্যে)
উঃ আমাদের মধ্যে যে অভাব, দুঃখকষ্ট আছে ইহাদের মধ্যেও তাহা দেখিতে পাই।
৪.৪ তোমরা শুষ্ক গাছের ডাল সকলেই দেখিয়াছ। (না–সূচক বাক্যে)
উঃ তোমাদের মধ্যে এমন কেহ নাই যারা শুষ্ক গাছের ডাল দ্যাখো নাই।
৪.৫। প্রবল বাতাসের বেগে কোথায় উড়িয়া যায়, কে বলিতে পারে ? (প্রশ্ন পরিহার কর)
উঃ প্রবল বাতাসের বেগে কোথায় উড়িয়া যায়, কেহ বলিতে পারে না।
৫ নীচের শব্দগুলির ব্যাসবাক্য–সহ সমাসের নাম লেখো : কীটপতঙ্গ, স্বার্থত্যাগ, বৃক্ষশিশু, বনজঙ্গল, জনমানবশূন্য, দিনরাত্রি, দেশান্তরে, নিরাপদ।
কীটপতঙ্গ = কীট ও পতঙ্গ – দ্বন্দ্ব সমাস।
স্বার্থত্যাগ = স্বার্থকে ত্যাগ —কর্ম তৎপুরুষ সমাস।
বৃক্ষশিশু = বৃক্ষের শিশু — সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস।
বনজঙ্গল = বন ও জঙ্গল— সমার্থক দ্বন্দ্ব সমাস।
জনমানবশূন্য = জনমানব শূন্য যে স্থান — কর্মধারয় সমাস।
দিনরাত্রি = দিন ও রাত্রি — বিপরীতার্থক দ্বন্দ্ব সমাস।
দেশান্তরে = অন্য দেশে – নিত্য সমাস।
নিরাপদ = নয় আপদ — নঞ-তৎপুরুষ সমাস।
৬ নিম্নেরেখাঙ্কিত অংশের কারক–বিভক্তি নির্দেশ করো :
৬.১ ইহাদের মধ্যে একের সহিত অপরের বন্ধুত্ব হয়।
বন্ধুত্ব = কর্মকারকে শূন্য বিভক্তি।
৬.২ আর কিছুকাল পরে ইহার চিহ্নও থাকিবে না।
ইহার = সম্বন্ধপদে ‘র’ বিভক্তি।
৬.৩ বীজ দেখিয়া গাছ কত বড়ো হইবে বলা যায় না।
বীজ = কর্মকারকে শূন্য বিভক্তি।
৬.৪ মানুষের সর্বোচ্চ গুণ যে স্বার্থত্যাগ, গাছে তাহাও দেখা যায়।
গাছে = অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।
৭ সন্ধিবদ্ধ পদগুলি খুঁজে নিয়ে সন্ধিবিচ্ছেদ করো :
৭.১ তাহার মধ্যে বৃক্ষশিশু নিরাপদে নিদ্রা যায়।
নিরাপদে = নিঃ + আপদে।
৭.২ অতি প্রকাণ্ড বটগাছ সরিষা অপেক্ষা ছোটো বীজ হইতে জন্মে।
অপেক্ষা = অপ + ইক্ষা।
৭.৩ এই প্রকারে দিনরাত্রি দেশদেশান্তরে বীজ ছড়াইয়া পড়িতেছে।
দেশান্তরে =দেশ + অন্তরে।