Saturday, April 27, 2024
HomeUncategorizedঅসুখী একজন|দশম শ্রেণী|প্রশ্ন-উত্তর সমাধান| Osukhi Ekjon|Class 10| Question Solved

অসুখী একজন|দশম শ্রেণী|প্রশ্ন-উত্তর সমাধান| Osukhi Ekjon|Class 10| Question Solved

অসুখী একজন

দশম শ্রেণী|প্রশ্ন-উত্তর সমাধান

১ অসুখী একজন ‘ কবিতাটির কবি হলেন – 

(A) মানেজ

(B) রোকে ডালটন

(C) লেওজেল রুগমা

(D) পাবলো নেরুদা

২ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতাটির তরজমা করেন – 

(A) মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়

(B) নবারুণ ভট্টাচার্য 

(C) উৎপলকুমার বসু

(D) শুভাশিষ ঘোষ

৩ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতাটি অনুবাদকের কোন্ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ? 

(A) এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ নয়

(B) পৃথিবীর শেষ কমিউনিস্ট

(C) বিদেশি ফুলে রক্তের ছিটে 

(D) ফ্যাতাড়ুর কুম্ভীপাক

৪ পাবলো নেরুদা নোবেল পুরস্কার পান—

(A) স্প্যানিশ সাহিত্যের রূপকার হিসেবে

(B) সোভিয়েত – স্প্যানিশ সাহিত্যের রূপকার হিসেবে

(C) ইংরেজি – স্প্যানিশ সাহিত্যের রূপকার হিসেবে

(D) জার্মান – স্প্যানিশ সাহিত্যের রূপকার হিসেবে

৫ পাবলো নেরুদা ছিলেন –

(A) চিলিয়ান কবি রাজনীতিবিদ

(B) ইউরোপিয়ান কবি ও রাজনীতিবিদ

(C) রাশিয়ান কবি ও ভাস্কর্য শিল্পী

(D) জার্মান কবি ও চিত্রকর

৬ অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল – 

(A) দরজায় 

(B) ছাদে

(C) বারান্দায়

(D) রাস্তায়

৭ পাবলো নেরুদার প্রকৃত নাম হল –

(A) নেফতালি রিকার্দো রেয়েস বাসোয়ালতো 

(B) রিকার্দো বাসওআলতো

(C) রেয়েন্স রিকার্দো নেকতালি বাসোয়ালতো

(D) পল ভেরলেইন নেরুদা

৮  ‘ সে জানত না ‘ –’সে ‘ হল – 

(A) পরাজিত সৈনিক

(B) কবিতার কথক

(C) কবির ভালোবাসার জন

(D) কবির মা

৯  ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় একটা কী চলে গেল বলতে কবি কোন্ জন্তুর উল্লেখ করেছেন ? 

(A) মানুষ

(B) কুকুর 

(C) হরিণ ।

(D) বিড়াল

১০ ‘ সে জানত না’— সে কী জানত না ? 

(A) কথক ফিরে আসবে

(B) কথক আর কখনও ফিরে আসবে না 

(C) কথক কখন আসবে

(D) কথক শীঘ্রই ফিরে আসবে

১১ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবি ক – টি সপ্তাহ কেটে যাওয়ার উল্লেখ করেছেন ? 

(A) একটি

(B) চারটি

(C) দুটি

(D) তিনটি

১২ ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় কে হেঁটে চলে গেল ? 

(A) গল্পের কথক

(B) একজন সৈনিক

(C) একটি কুকুর

(D) গির্জার এক নান

১৩ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবি পরিত্যক্ত রাস্তায় কী জন্মানোর কথা বলেছেন ?

(A) ঘাস 

(B) তরুলতা

(C) গাছ

(D) শস্য

১৪ ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় একটার – পর – একটা বছর কীভাবে নেমে এল বলে কবি মনে করেছেন ?

(A) পাথরের মতো 

(B) জলের মতো

(C) ফুলের মতো

(D) গানের মতো

১৫ বৃষ্টি কী ধুয়ে দিয়েছিল ?

(A) রাস্তার ধুলো

(B) রক্তের দাগ

(C) কথকের পায়ের দাগ

(D) কাঠকয়লার দাগ

১৬ ‘ তারপর যুদ্ধ এল –

(A) রক্তের সমুদ্রের মতো । ‘

(B) আগ্নেয়পাহাড়ের মতো

(C) পাহাড়ের আগুনের মতো

(D) রক্তের এক আগ্নেয়পাহাড়ের মতো

১৭ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় শিশু আর বাড়িরা –

(A) খুন হল 

(B) হারিয়ে গেল

(C) বেঁচে রইল

(D) জেগে রইল ।

১৮ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় সব ধ্বংস হলেও অপেক্ষমান সেই মেয়েটির কী হল না ?

(A) অসুখ হল না

(B) মৃত্যু হল না

(C) খুন হল না

(D) জ্বলে গেল না

১৯  ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কীসে সমস্ত সমতল ধ্বংস হল ?

(A) ভূমিকম্পে

(B) ধসে

(C) আগুনে

(D) বন্যায়

২০ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় দেবতাদের চেহারা ছিল – 

(A) শান্তহলুদ 

(B) লাল – নীল

(C) অশান্ত – নীল

(D) ধীর – হলুদ

২১ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় শান্ত – হলুদ দেবতারা কত বছর ধ্যানে ডুবে ছিল ?

(A) একশো

(B) দু – হাজার

(C) পাঁচশো

(D) হাজার

২২ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় শান্ত – হলুদ দেবতারা কীভাবে মন্দির থেকে উলটে পড়ল ?

(A) টুকরো টুকরো হয়ে 

(B) গুঁড়োগুঁড়ো হয়ে

(C) অর্ধেক হয়ে

(D) ভেঙে ভেঙে

২৩ তারা আর স্বপ্ন দেখতে পারল না । কারা স্বপ্ন দেখতে পারল না ?

(A) দেবতারা 

(B) শয়তানরা

(C) মানুষেরা

(D) যক্ষরা

২৪  ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কে মিষ্টি বাড়ির বারান্দার ঝুলন্ত বিছানায় ঘুমিয়েছিল ?

(A) মেয়েটি 

(B) বন্ধুটি

(C) কবি

(D) ভাইটি

২৫ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির ঝুলন্ত বিছানার ধারের গাছটি ছিল – 

(A) গোলাপি 

(B) নীল

(C) হলুদ

(D) সবুজ

২৬ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় ছড়ানো করতলের মতো পাতা ছিল— 

(A) চিমনির

(B) মশারির

(C) বিছানার

(D) বসার ঘরের

২৭ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যে বাদ্যযন্ত্রটির উল্লেখ আছে সেটি হল-

(A) বীণা

(B) জলতরঙ্গ 

(C) সেতার

(D) বাঁশি

২৮ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির সেই মিষ্টি বাড়ির জলতরঙ্গটি কোন্ সময়ের ? 

(A) প্রাচীন কালের

(B) আধুনিক সময়ের

(C) বিংশ শতকের

(D) মধ্যযুগীয় সময়ের

২৯ ‘ সব _____ হয়ে গেল , জ্বলে গেল আগুনে । ‘

(A) চূর্ণ 

(B) বিচূর্ণ

(C) শক্ত

(D) চুরমার

৩০ ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় যেখানে শহর ছিল সেখানে ছড়িয়ে রইল – 

(A) কাঠকয়লা 

(B) সাপ

(C) কয়লা

(D) আগুন

৩১ ‘ দোমড়ানো লোহা , মৃত মূর্তির বীভৎস / মাথা

(A) রুপোর

(B) সোনার

(C) মাটির

(D) পাথরের

৩২ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় শহর ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গে রক্তের দাগের রং হয়েছিল— 

(A) কালো 

(B) হলুদ

(C) লাল

(D) সবুজ

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

আমি তাকে ছেড়ে দিলাম — ‘ আমিকে

উত্তরঃ: নবারুণ ভট্টাচার্য অনূদিত পাবলো নেরুদা রচিত ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় ‘ আমি ‘ বলতে স্বয়ং কবি নিজেকে তথা কবিতার কথককে বুঝিয়েছেন । 

২ কবির অপেক্ষায় কে দাঁড়িয়েছিল ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবি যেদিন নিজ বাসভূমি ছেড়ে চলে যান , সেদিন তাঁর প্রিয় নারী দরজায় অপেক্ষায় দাঁড়িয়েছিল । 

৩ অসুখী একজনকবিতায় কথক অপেক্ষারতাকে ছেড়ে কোথায় চলে গেলেন

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় কথক দরজায় অপেক্ষারতা প্রিয়জনকে দাঁড় করিয়ে রেখে বৃহত্তর স্বার্থে দূর থেকে দূরে কোনো স্থানে চলে গেলেন ।

অসুখী একজনকবিতায় কবির / কথকের চলে যাওয়া সত্ত্বেও সমাজজীবনের নিজের গতিতে চলার কী কী অনুষঙ্গ কবিতায় উল্লিখিত আছে ?

উত্তরঃ: নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় কথকের চলে যাওয়া সত্ত্বেও সমাজজীবনের আপন গতিতে বয়ে চলার অনুষঙ্গগুলি হল — ‘ একটি কুকুর চলে গেল , হেঁটে গেল গির্জার এক নান ‘ ।

অসুখী একজনকবিতায় কবির পায়ের দাগ কীসে ধুয়ে গিয়েছিল ?

উত্তরঃ: নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় কবির পায়ের দাগ বৃষ্টিতে ধুয়ে গিয়েছিল । স্মৃতির মলিনতা অর্থে উপমাটি ব্যবহৃত হয়েছে ।

 ৬নেমে এল তার মাথার ওপর” কার মাথার ওপর কী নেমে আসার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কথকের জন্য অপেক্ষা করতে থাকা তার প্রিয়তমার মাথার ওপর পাথরের মতো ভারী একটার পর একটা বছর নেমে এল । 

অসুখী একজনকবিতায় কবিপাথরের মতোবলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন ?

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদা তাঁর ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কথকের জন্য তাঁর প্রেমিকার অন্তহীন অপেক্ষা আর দুঃসহ বেদনাকে পাথরের গুরুভারের সঙ্গে তুলনা করেছেন ।

অসুখী একজনকবিতায় উল্লিখিত যুদ্ধে অপেক্ষাতুরা মেয়েটির কী হল ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় উল্লিখিত ভয়াবহ যুদ্ধের বিধ্বংসী মত্ততা  ে অতিক্রম করে শুধু আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে রইল , সেই অপেক্ষাতুরা মেয়েটি ।

অসুখী একজনকবিতায় যুদ্ধে সমতলের কী অবস্থা হয়েছিল ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যুদ্ধের ধ্বংসাত্মক ছায়া সমস্ত সমতলে । আগুনের লেলিহান শিখার মতো ছড়িয়ে পড়ে সব কিছুকে জ্বালিয়ে – পুড়িয়ে ছারখার করল । 

১০অসুখী একজন কবিতায় কবি দেবতাদের চেহারার কী বর্ণনা দিয়েছেন ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবি ‘ শান্ত – হলুদ ‘ দেবতাদের চেহারার ছবি এঁকেছেন ।

১১অসুখী একজন কবিতায় দেবতারা হাজার বছর ধরে কী করছিল বলে উল্লেখ পাওয়া যায় ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় শাস্ত – হলুদ দেবতারা হাজার বছর ধরে ধ্যানে ডুবে ছিল বলে কবি উল্লেখ করেছেন ।

১২অসুখী একজন কবিতায় দেবতারা কোথা থেকে টুকরো টুকরো হয়ে উলটে পড়েছিল ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যুদ্ধের অভিঘাতে হাজার বছর ধরে ধ্যানে ডুবে থাকা দেবতারা মন্দির থেকে টুকরো টুকরো হয়ে উলটে পড়েছিল ।

১৩তারা আর স্বপ্ন দেখতে পারল না।– ‘ তারাবলতে কাদের কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ: ‘ তারা ‘ বলতে শান্ত – হলুদ দেবতাদের কথা বলা হয়েছে ।

১৪অসুখী একজনকবিতায় কবির বাড়িটি কেমন ছিল ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির বাড়িটি ছিল মধুর স্মৃতি ও স্বপ্নবিজড়িত । অর্থাৎ বাড়িটি সম্পর্কে এখানে শৈশব – কৈশোরের আকর্ষণজনিত আবেগ ও আবেশ প্রকাশিত হয়েছে ।

১৫অসুখী একজনকবিতায় কবির ঝুলন্ত বিছানাটি কোথায় অবস্থিত ছিল

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির মধুর স্মৃতিবিজড়িত মিষ্টি বাড়িতে ঝুলন্ত বিছানাটি বারান্দায় অবস্থিত ছিল ।

 ১৬অসুখী একজন কবিতায় যুদ্ধে কবির বাড়ির অবস্থা কী হয়েছিল ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় , যুদ্ধে কবির স্বপ্ন ও স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি ভেঙে , গুঁড়িয়ে , আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে গিয়েছিল ।

 ১৭অসুখী একজনকবিতায় যেখানে শহর ছিল সেখানে যুদ্ধের ফলে কী কী ছড়িয়ে রইল ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যেখানে শহর ছিল , সেখানে যুদ্ধের পর ছড়িয়ে রইল কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , মৃত পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা আর পোড়া শুকনো রক্তের কালো দাগ ।

১৮আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায় / – ‘ আরশব্দটি ব্যবহারের কারণ কী ?

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যুদ্ধ – দাঙ্গা – হিংসার আগুন পেরিয়ে কথকের প্রিয়তমার ভালোবাসা ও চিরন্তন অপেক্ষাকে বোঝাতেই শেষ পঙ্ক্তিতে ‘ আর ‘ শব্দটির ব্যবহার হয়েছে । 

১৯রক্তের একটা কালো দাগ কোথায় রক্তের একটা কালো দাগ দেখা গিয়েছিল

উত্তরঃ: যুদ্ধের ফলে ধ্বংসপ্রাপ্ত শহরে কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , মৃত পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথার সঙ্গে রক্তের কালো দাগ দেখা গিয়েছিল । 

২০সমস্ত সমতলে ধরে গেল আগুনকেন এমন হয়েছিল ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতা অনুসারে আগ্নেয়পাহাড়ের মতো ভয়াবহ যুদ্ধ আসার ফলে সমস্ত সমতলে আগুন ধরে গিয়েছিল ।

 ২১অসুখী একজনকবিতাটির অনুবাদক কে

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতাটির অনুবাদক নবারুণ ভট্টাচার্য ।

২২অসুখী একজনকবিতায় যুদ্ধের ছবিটি কীভাবে ফুটে উঠেছে

উত্তরঃ: কবি পাবলো নেরুদা ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যুদ্ধের ভয়াবহতাকে রক্তের এক আগ্নেয়পাহাড়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন ।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

আমি তাকে ছেড়ে দিলাম’- কবি কাকে ছেড়ে দিলেন তাকে তিনি কীভাবে রেখে এসেছিলেন ?

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতা থেকে গৃহীত অংশে কথক তাঁর প্রিয় নারীকে অপেক্ষায় রেখে নিজ বাসভূমি ছেড়ে দূরে চলে গিয়েছিলেন । 

  স্বদেশ ছেড়ে দূর থেকে দূরতর কোনো স্থানে চলে যাওয়ার সময় তিনি দরজায় তাঁর অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে রেখে যান কোনো এক প্রিয়জনকে । যদিও সে জানত না যে , কবি আর কখনও ফিরে আসবে না । এইভাবেই কবি এক চিরকালীন বিদায় মুহূর্তের ছবি এঁকেছেন ।

বৃষ্টিতে ধুয়ে দিল আমার পায়ের দাগ / ঘাস জন্মালো রাস্তায়’— উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো

উত্তরঃ: উদ্ধৃতিটি পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতা থেকে গৃহীত । কথক তাঁর প্রিয়তমাকে অপেক্ষমান রেখে জীবন ও জীবিকার তাগিদে বহুদুরে পাড়ি দেন । থমকে যায় মেয়েটির জীবন কিন্তু সময় থেমে থাকে না । তাই কথকের চলে যাওয়াতে জীবনের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয় না । সপ্তাহ – বছর কেটে যায় । প্রাকৃতিক নিয়মেই কথকের চলার পথের পদচিহ্ন মুছে যায় । তাতে ঘাস জন্মায় । কিন্তু কবির চলে যাওয়ার মুহূর্তটি তার প্রিয়তমার হৃদয়ে অন্তহীন অপেক্ষার মুহূর্ত হয়ে রয়ে যায় । 

৩“পাথরের মতো পর পর”, বছরগুলো বছরগুলোকে পাথরের মতো বলা হয়েছে কেন ?

উত্তরঃ: জীবন ও জীবিকার জন্য বাসভূমি ছেড়ে দূরে চলে যাওয়া তাঁর মানুষটি যে ফিরে আসবেন না এ কথা তার প্রেমিকার অজানা ছিল । কিন্তু জীবন এতে থেমে থাকেনি । বৃষ্টিতে কবির পায়ের দাগ মুছে তাতে ঘাস জন্মায় । নিরন্তর অপেক্ষা চলতেই থাকে । দীর্ঘ প্রতীক্ষারতা নারীর জীবনে তার প্রিয়তমের অনুপস্থিতির বছরগুলো যেন পাথরের বোঝা হয়ে তার মাথার ওপর নেমে আসে । এখানে ‘ পর পর ‘ বলতে বিচ্ছেদ বেদনার গভীরতা বোঝানো হয়েছে ।

৪ যুদ্ধকেরক্তের এক আগ্নেয়পাহাড়বলা হয়েছে কেনো

উত্তরঃ: উদ্ধৃত প্রসঙ্গটি কবি পাবলো নেরুদা রচিত ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতা থেকে গৃহীত । 

 কবিতায় যুদ্ধকে কবি আগ্নেয়পাহাড়ের সঙ্গে তুলনা করেছে । আগ্নেয়পাহাড় চারপাশে ছড়িয়ে দেয় জ্বলন্ত লাভা । আর সেই আগুনে ছাই হয় জীবনের যাবতীয় চিহ্ন । ঠিক তেমনই যুদ্ধের ফলে মানুষের মনে জমে থাকা হিংসা – দ্বেষ আর ঘৃণা লাভার মতো ছিটকে ওঠে । অপমৃত্যু ঘটে মানবতার । এই মৃত্যুময় ধ্বংসলীলার নারকীয় রূপটিকে ফুটিয়ে তুলতেই কবি যুদ্ধকে , রক্তের এক আগ্নেয়পাহাড় ‘ বলেছেন ।

সেই মেয়েটির মৃত্যু হলো না ।“ কোন মেয়েটির কেন মৃত্যু হল না ?

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতার কথকের জন্য অপেক্ষারতা যে মেয়েটির উল্লেখ পাওয়া যায় , তার কথা বলা হয়েছে । মেয়েটি জানত না যে , তার প্রিয়তম আর ফিরে আসবে না । জীবন আপন ছন্দে চলল , ক্রমে সপ্তাহ – বছর অতিক্রান্ত হল । কবির পদচিহ্ন বৃষ্টিতে ধুয়ে গেল , তবু অপেক্ষা চলল । এরপর যুদ্ধের গ্রাসে নগর , দেবালয় চূর্ণবিচূর্ণ হল এবং মৃত্যু হল শিশুসহ অজস্র মানুষের । শুধু অপেক্ষমান মেয়েটির মৃত্যু হল না কারণ ভালোবাসা অমর , চিরন্তন ও শাশ্বত ।

শান্ত হলুদ দেবতারা’- দেবতাদেরশান্ত হলুদ বলা হয়েছে কেন ? তাদের কী পরিণতি হয়েছিল

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবি চলে যাওয়ার পর একসময় যুদ্ধ বাধল । সেই যুদ্ধের বীভৎসতায় নগরসভ্যতা , কবির স্বপ্নের বাড়ি – ঘর সব চূর্ণ হয়ে গেল , এমনকি ধ্বংস হল দেবতাদের মন্দিরও । হাজার হাজার বছরের যে – দেবতারা মানুষের মনে বিশ্বাস জাগিয়ে এসেছেন , যুদ্ধ তাদেরও আসনচ্যুত করল । প্রাচীন দেবতাদের নিষ্ক্রিয়তা ও জীর্ণতাকে বোঝাতে হলুদ ও শান্ত বলা হয়েছে । যুদ্ধের আগুনে নগর পুড়লে দেবালয়ও বাদ যায় না । মানুষের মনে দেবতারা যে – বিশ্বাস বোধের জন্ম দিয়েছিল , তা ধ্বংস হল । 

৭তারা আর স্বপ্ন দেখতে পারল না ’- উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো  

উত্তরঃ: উদ্ধৃত অংশটি পাবলো নেরুদার কবিতা ‘ অসুখী একজন ‘ থেকে গৃহীত । 

 এখানে কবি বিনাশ ও ধ্বংসের কলরোলে দেবতাদের অসারতার উল্লেখ করেছেন । মানবতার অপচয় প্রাণহানি কিংবা চূড়ান্ত বীভৎসতার সময় কোনো দৈব – মাহাত্ম্য প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে না । উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য মানুষের মতোই একইরকমভাবে যুদ্ধ -তাণ্ডবের ভয়াবহতায় তারাও নিরাশ্রয় , অস্তিত্বহীন এবং চূর্ণবিচূর্ণ হয় । তাই এককথায় দৈব ক্ষমতার ফানুস চুরমার হয়ে যাওয়ায় তাদের যেন মানুষকে স্বপ্ন দেখানোর ক্ষমতা লোপ পায় । আলোচ্য অংশে কবির এই ভাবনাই প্রকাশ পেয়েছে ।

৮ প্রাচীন জলতরঙ্গ / সব চূর্ণ হয়ে গেল , ‘ — উদ্ধৃতাংশে কবি কী বুঝিয়েছেন

উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশে কবি বুঝিয়েছেন আগ্নেয়পাহাড়ের মতো রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের লেলিহান আগুন সমতলকেও গ্রাস করেছিল । কবির শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত মিষ্টি বাড়িটিও যুদ্ধের নির্মম আঘাতে ধ্বংস হয়েছিল । তার বারান্দার ঝুলন্ত বিছানা , গোলাপি গাছ , ছড়ানো করতলের মতো পাতা , চিমনি ও প্রিয় প্রাচীন জলতরঙ্গ এইসব চূর্ণ হল , সম্পূর্ণ ভস্ম হল আগুনে । অর্থাৎ কবির আশ্রয় ও অস্তিত্বের একমাত্র প্রতীকচিহ্নটিও যুদ্ধের নিষ্ঠুর ধ্বংসলীলায় নিশ্চিহ্ন হয়েছিল । 

.‘ সেখানে ছড়িয়ে রইল কাঠকয়লা’— বলতে কবি প্রশ্নোদৃত অংশে কৰি বুঝিয়েছেন কী বুঝিয়েছেন ?

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতাটিতে কোনো এক অজ্ঞাত কারণে কবি প্রিয়তমা , ঘরবাড়ি , এমনকি তাঁর প্রিয় শহরও ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হন । এরপরে একদিন আসে বীভৎস যুদ্ধ । যার করাল গ্রাসে কবির ঘরবাড়ি , দেবালয় সমস্ত কিছু চূর্ণ হয়ে আগুনে জ্বলে যায় । শহরটিও বাদ যায় না । এক সময়ের সুন্দর শহরে ছড়িয়ে থাকে কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , মৃত পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা আর রক্তের দাগ । আসলে শহরের বিধ্বংসী রূপটি তুলে ধরতেই উদ্ধৃতিটি ব্যবহৃত হয়েছে

১০আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায় মেয়েটি কে ? সে অপেক্ষা করে কেন

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় ‘ সেই মেয়েটি ’ হল কথকের প্রিয়তমা , যাকে রেখে কবি বহুদূরে চলে গিয়েছিলেন । কবি যে আর ফিরে আসবেন না এ কথা তার প্রিয়তমা জানত না । তার অপেক্ষার বোঝা গভীর থেকে গভীরতর হলেও সে ভেঙে পড়েনি । এই মেয়েটিকে ধ্বংস যেন স্পর্শ করতে পারে না ; মৃত্যু – যুদ্ধ – হিংসা , দাঙ্গার স্পর্শ পেরিয়েও তাই সে অমলিন থাকে । কারণ ভালোবাসার কখনও মৃত্যু হয় না । সেসময় থেকে সময়ান্তরে অপেক্ষা করে বয়ে চলে নিজস্ব ধারায় ।

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

. ‘ আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায়।অপেক্ষমান এই নারার মধ্যে দিয়ে কবি মানবীয় ভালোবাসার যেঅনির্বাণ রূপটিকে ফুটিয়ে তুলেছেন , তা পাঠ্য কবিতা অবলম্বনে আলোচনা করো  

অথবা , যুদ্ধের নেতিবাচক ভাবের পাশাপাশি যেমানবিক আবেদনঅসুখী একজনকবিতায় প্রকাশিত হয়েছে আলোচনা করো  

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদা তাঁর ‘ অসুখী একজন ’ কবিতার অপেক্ষমান নারীর মধ্যে ভালোবাসার অনির্বাণ রূপটি ফুটিয়ে তুলেছেন । কথক তার প্রিয় নারীকে রেখে চলে যান বহুদূরে । সে জানত না যে , তার প্রিয়তম আর ফিরে আসবে না । সময় চলমান , জীবনও তার সঙ্গে চলমান । সপ্তাহ – বছর কেটে যায় । কথকের পদচিহ্ন ধুয়ে গিয়ে তার ওপর ঘাস জন্মায় । তবুও সে নারীর অপেক্ষা থামে না । এইভাবে অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে মুহূর্তগুলো একটার – পর – একটা পাথরের মতো ভারী হয়ে নেমে আসে মেয়েটির মাথার ওপর । 

 এরপর যুদ্ধ ও যুদ্ধের আগুন ছড়িয়ে পড়ল শহরে । সে  আগুনের করাল গ্রাসের হাত থেকে বাদ গেল না শিশু কিংবা দেবতারাও । শান্ত হলুদ দেবতারা তাদের মন্দির থেকে টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে পড়ে । কবির স্বপ্নের বাড়ি – ঘর সব চূর্ণ হয়ে যায় , পুড়ে যায় আগুনে । যেখানে শহর ছিল সেখানে চারদিকে ছড়িয়ে রইল কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা আর রক্তের একটা কালো দাগ । কিন্তু এতসবের মধ্যেও কবির প্রিয়তমা বেঁচে রইল কারণ প্রেম শাশ্বত , তার মৃত্যু নেই । এই প্রেম মানুষকে মরতে মরতে বাঁচতে শেখায় । এই ধ্বংসের মধ্যেও বেঁচে থাকে মেয়েটির অনির্বাণ ভালোবাসা , বেঁচে থাকে ভালোবাসার মানুষের জন্য তার প্রতীক্ষা ।

  1. তারপর যুদ্ধ এল ‘ — পাঠ্য কবিতায় কবি যুদ্ধের যেআশ্চর্য করুণ মর্মস্পর্শী ছবি এঁকেছেন , তা নিজের ভাষায় আলোচনা করো

অথবা , শিশু আর বাড়িরা খুন হলো ’— এই আশ্চর্যসংহত ছবিটির মধ্যে যুদ্ধের পৈশাচিক বর্বরতা কীভাবে প্রকাশিত হয়েছে তা কবিতা অবলম্বনে লেখো  

উত্তরঃ: চিলিয়ান কবি পাবলো নেরুদা জীবনযুদ্ধের একজন লড়াকু সৈনিক । চোখের সামনে ঘটে যাওয়া দুই বিশ্বযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছেন তিনি । তাই পাঠ্য কবিতায় তিনি যুদ্ধের যে – করুণ ও মর্মস্পর্শী ছবি এঁকেছেন তা অত্যন্ত বাস্তবোচিত । ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতাটি আসলে যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এক শাশ্বত ভালোবাসার গল্প । কবি যুদ্ধের বীভৎসতার মাঝে প্রেম যে অনির্বাণ তা দেখাতে গিয়ে খণ্ড খণ্ড যুদ্ধের চিত্র তুলে ধরেছেন । কবি তাঁর প্রিয়তমাকে অপেক্ষায় রেখে দূরে চলে যাওয়ার পর একদিন ভয়াবহ বীভৎসতা নিয়ে যুদ্ধ নেমে এল । মানুষ আশ্রয়হীন হল । নৃশংসতার হাত থেকে রেহাই পেল না শিশুরাও । দাবানলের মতো যুদ্ধের আগুন সমতলে ছড়িয়ে পড়ল । ধ্বংস হল দেবালয় আর তার ভেতরের দেবতারা । তাদের দেবত্ব নষ্ট হল । মানুষকে তারা স্বপ্ন দেখাতে ব্যর্থ হল । কবির সেই মিষ্টি বাড়ির ঝুলন্ত বিছানা , গোলাপি গাছ , প্রাচীন জলতরঙ্গ সব চূর্ণ ও ভস্ম হল যুদ্ধের আগুনে । ঠিক একইভাবে শহরটাও পুড়ে গেল । বীভৎসতার চিহ্ন নিয়ে ছড়িয়ে – ছিটিয়ে পড়ে রইল কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা আর রক্তের একটা কালো দাগ । শুধু সেই ধ্বংসস্তূপে বেঁচে থাকল মেয়েটির অপেক্ষা ও অবিচল ভালোবাসা ।

. পাঠ্য কবিতাটি অতৃপ্ত মানবহৃদয়ের একান্ত আতিরঅসুখী একজন কবিতা অবলম্বনে আলোচনা করো  

অথবা , ‘ অসুখী একজন কবিতায় বিশ্বশান্তির বার্তা নিহিত —– আলোচনা করো  

অথবা , ‘ অসুখী একজনকবিতাটিকে যুদ্ধবিরোধী কবিতা বলা যায় কিনাবিশ্লেষণ করো  

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদার কবিতা ‘ অসুখী একজন’— এই বাঞ্ছনাময় নামকরণ থেকেই বোঝা যায় যে , কবিতাটি অতৃপ্ত কোনো বাসনার প্রতিচ্ছবি । অনেক সময় কবি – সাহিত্যিকের ব্যক্তিগত জীবনের প্রতিচ্ছবি যা সর্বজনের ভাবনার সঙ্গে মিলে যায় তা সাহিত্যে প্রতিফলিত হয় । আমাদের পাঠ্য কবিতাটিতেও তা ঘটেছে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই । 

 কবি চরম অতৃপ্তি নিয়ে কোনো এক অজ্ঞাত কারণে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন । কিন্তু তাঁর প্রিয় নারী তাঁর অপেক্ষায় থাকে , কেন – না সে জানে না যে , তার প্রিয়তম আর ফিরে আসবে না । কবিতার শেষ পর্যন্ত এই অপেক্ষাকেই আমরা দেখেছি । সময় অতিক্রান্ত হয় , আবছা হয় স্মৃতি , অপেক্ষার বছরগুলো ভারী হয় । প্রাণঘাতী যুদ্ধের বীভৎসতা তাকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে । দেবালয় , শহর সব কিছু ধ্বংস হওয়া সত্ত্বেও অতৃপ্ত হৃদয়ে সেই মেয়েটি অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকে । অন্যদিকে কবিও অতৃপ্ত বাসনা নিয়ে ফিরে আসতে চান তাঁর প্রতীক্ষমান ভালোবাসার কাছে । সব কিছু ধ্বংসের মাঝেও কবির হৃদয়ে অপেক্ষারতা নারীটির মৃত্যু নেই । চিরায়ত অতৃপ্ত মানবাৰ্তিই এই নারী । কবির অতৃপ্ত মন তার কাছে বার বার ফিরে যেতে চায় বলেই তিনি বলে ওঠেন , ‘ আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায় ‘ । স্পষ্টতই কবিতাটিতে কবি যুদ্ধবিরোধী মনোভাব নিয়ে বিশ্বশান্তির বার্তা প্রেরণ করেছেন পাঠকের কাছে ।

Click Here To Download The Pdf

RELATED POSTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Recent Posts

error: Content is protected !!